এখনো রহস্যাবৃত সেই ১২ টুকরো লাশ
স্পেশাল করেসপনডেন্ট || নিউজ নারায়ণগঞ্জ ০৮:২০ পিএম, ২৭ জুলাই ২০১৮ শুক্রবার

৯ বছরেও রহস্যে ঘেরা রয়েছে নারায়ণগঞ্জ শহরের আমলাপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা সেই ১২ টুকরো লাশের রহস্য। কে বা কারা কাকে হত্যা করে সেই লাশ ফেলে গেছে তার কোন হদিস পাওয়া যায়নি। বরং এখনো পুরো বিষয়টি রয়েছে তিমিরে।
নারায়ণগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত দুটি খুন এখন সবার মুখে মুখে। একটি হলো কাপড় ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহা ও অপরটি প্রবীর কুমার ঘোষ। দুইজনই ছিল ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আর দুইজনকেই ৭ টুকরো করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে অপর বন্ধু ঘাতক পিন্টু দেবনাথ। এ দুইজনকে হত্যার পরেই আলোচনায় চলে এসেছে সেই ১২ টুকরো লাশের খবর।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৯ শহরের আমলাপাড়া আজমেরী মঞ্জিলের পূর্ব পাশে ২টি বস্তাবন্দি অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের গভীর ড্রেনের মাটি কাটার সময় এ লাশের সন্ধান পায় শ্রমিকরা। নিহত যুবকের বয়স আনুমানিক ৩০-৩২ বলে পুলিশের ধারণা। নারায়ণগঞ্জে গত কয়েক যুগে এই প্রথম ১২ টুকরা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শহরবাসীর মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল।
পুলিশ জানায়, ২০০৯ সালের ২৯ এপ্রিল শহরের আমলাপাড়ায় আজমেরী মঞ্জিল বাড়ির দেয়াল ঘেঁষে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা গভীর ড্রেন নির্মানের জন্য মাটি খনন করার সময় দুপুরে শ্রমিক আব্দুল ও নূরুল ইসলাম মাটির নিচে দু’টি বস্তা দেখতে পায়। মাটি কাটার সময় বস্তায় কোদালের আঘাত লাগার পর সেখান থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকে। খবর পেয়ে বিকাল ৪টায় সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তা দুটি উদ্ধার করে। বস্তা খুললে বেরিয়ে আসে যুবকের ১২ টুকরা বিকৃত ও পঁচন ধরা লাশ। বুক থেকে পেট পর্যন্ত ১ টুকরা, মাথা ও দুই হাতের ৪ টুকরা, দুই পায়ের ৬ টুকরা ও কোমরের ১ টুকরা অর্থাৎ ঘাতকরা লাশটিকে ১২ টুকরা করার পর বস্তা বন্দি করে। হত্যার পর লাশটি আরো কয়েক টুকরা করা হয়েছিল বলে পুলিশের ধারণা। শরীরের বেশ কয়েকটি অংশ উক্ত বস্তায় পাওয়া যায়নি। তবে বস্তায় নীল রংয়ের শার্ট ও কালো প্যান্ট পাওয়া গেছে।
নারায়ণগঞ্জে গত কয়েক বছরে কাউকে হত্যা করে লাশ ৭ কিংবা এর বেশী টুকরো করেছে তার কোন বার্তা নেই। তবে গত এক মাসের ব্যবধানে ৭ টুকরো লাশ উদ্ধার ও খবরের পর এবার আলোচনায় চলে এসেছে আমলপাড়া এলাকাতেই কয়েক বছর আগে উদ্ধার করা ১২ টুকরো লাশের সেই খবরটি। আমলপাড়ায় পিন্টু দেবনাথ যে বাড়িতে ভাড়া থাকতো তার বাড়ি থেকে সেই ১২ টুকরো লাশ উদ্ধারের স্পট খুব বেশী দূরে না। হয়তো এ ঘটনায়ও বেরিয়ে আসতে পারে অনেক তথ্য।
ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহাকে ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর হত্যার খবরও বেরিয়েছে মাত্র কয়েকদিন আগে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই অনেকটা কাকতালীয়ভাবেই বেরিয়ে আসে প্রবীর ঘোষ ও স্বপন কুমার সাহার মৃত্যুর খবর।